আত্ম-সমালোচনা
আমার এক পরিচিত মানুষ একবার তার বন্ধুর কাছে অভিযোগ করে বলছিলেন যে, তার স্ত্রী ঠিকমতো কানে শোনে না। বন্ধু এ কথা শুনে লোকটিকে পরামর্শ দিলো, তুমি দূর থেকে তোমার স্ত্রীর সাথে কথা বলবে। তারপর একটু কাছে যাবে, আবার কথা বলবে। আরো কাছে যাবে, আরেকটু কথা বলবে। এভাবে বিভিন্ন দূরত্ব থেকে কথা বলে তুমি বোঝার চেষ্টা করবে যে, তোমার স্ত্রীর কানের সমস্যাটি আসলে কতটা ব্যাপক।

লোকটি তার বন্ধুর পরমর্শ মতো করল এবং সেদিন রাতে একটু দূর থেকেই স্ত্রীকে ডিনারের বিষয়ে প্রশ্ন করল। কিন্তু স্ত্রীর কোনো উত্তর তিনি শুনতে পেলেন না। তখন তিনি একটু কাছে গিয়ে আবারও প্রশ্নটি করলেন। এভাবে কাছে যেতে যেতে তিনি একেবারে স্ত্রীর গা ঘেঁষে দাঁড়িয়ে প্রশ্নটি করলেন। স্ত্রী তখন তাকে বললেন, ‘আমি তোমার প্রশ্নগুলো শুনেছি এবং এ পর্যন্ত ৫ বার বলেছি যে, ওভেনে মুরগি গরম করা আছে।’ লোকটি বিস্মিত হলো। তিনি কখনো ভাবতেও পারেননি যে, তিনিই কানে কম শুনেন।

এর আগে বন্ধ-ুবান্ধব বা আত্মীয়-স্বজনের কথা শুনতে যতবারই অসুবিধা হতো, তিনি ধরেই নিতেন যে, হয়তো অপর দিকের লোকটির ফোনে কোনো সমস্যা আছে অথবা নেটওয়ার্কে কোনো সমস্যা আছে। অর্থাৎ সমস্যাটি যে তার নিজের মাঝেই আছে, তিনি তা কখনোই ভাবেননি।

আমরা যখন অপরের কাছে নিজের সমস্যাগুলো শেয়ার করি এবং তারা যখন সে সমস্যাগুলো শুনে আমাদেরকে সমর্থন করে এবং অপরের ঘাড়ে সব দোষ চাপায়, তখন আমরা খুশিই হই। বিপরীতে, আমরা কাউকে কোনো সমস্যার কথা বলার পর যদি তিনি উল্টো আমাদের ঘাড়ে কিঞ্চিৎ দোষ চাপান অথবা বলেন যে, সমস্যাটির সমাধান আমাদেরই হাতে, তাহলে আমরা স্বস্তির সাথে তা মানতে পারি না। বরং আমরা তাকে ভুল বুঝি। বারবারই মনে হয় যে, ‘তার কাছে আসা বা কথা বলাই ঠিক হয়নি। কোথায় আসলাম অন্যের দুর্নাম করার জন্য কিন্তু এ শ্রোতা উল্টো আমাদেরকেই দোষারোপ করছেন।’ 

বইঃ ইগো আত্ম -অহমিকার স্বরূপ
লেখকঃ সালমান আল আওদাহ
অনুবাদকঃ আলী আহমাদ মাবরুর
পৃষ্ঠাঃ ২৭২
নির্ধারিত মূল্যঃ ২৭৫